আব্দুস সালাম,টেকনাফ :
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ ইউনুছ সিকদার ও আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের সভাপতিকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৮নভেম্বর) বিকাল ৩টায় টেকনাফ প্রেসক্লাবের সামনে সর্বস্তরের জনগণের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত ইউনুছ সিকদারের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় মো:আলম প্রকাশ শফিয়া, মোঃ হারুন, সাইফুল করিম, রেজাউল করিম, আলী মোহাম্মদ ফোরকান, ইফতেখার আহমেদ মাসুম, আবছার উদ্দিন ও আলী জোহারসহ মোট আটজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে এবং আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানায় যার মামলা নম্বর ৩০,জি.আর. নং-৭৯৯/২৫ইং।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন জনবান্ধব জনপ্রতিনিধিকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও খুনিরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আমরা খুনিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করতে হবে এবং অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাতে এই জনপদে আর কেউ এমন হত্যার শিকার না হন। টেকনাফে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এলাকায় অপরাধ দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার বিকালে দাওয়াতের কথা বলে ইউনুস মেম্বারকে রঙ্গিখালীতে ডেকে নিয়ে যান কোকো ক্রীড়া সংসদের বহিস্কৃত টেকনাফ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আলম। তখন রাতের মধ্যে ফেরার কথা থাকলেও পরের দিন সকালে তিনি মৃতদেহ হিসেবে বাড়িতে ফিরেন। পরিবার চায় বাবার নৃশংস হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, টেকনাফ পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বাবলু, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার, সাবরাং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস শুক্কুর,
ছাত্র-প্রতিনিধি রবিউল হাসান মামুন, মোরশেদ আলম, রুয়ায়েত হোসাইন, আব্দুল আজিজ ও টেকনাফ পৌর বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় উপস্থিত জনতার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আবু জায়েদ মো: নূর বলেন, এই ঘটনায় আমরা দিন রাত এক করে কাজ করে যাচ্ছি। আমরাও এ হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে মর্মাহত। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর)রাতে ইউনুস মেম্বারকে টেকনাফ উপজেলা আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আলোচিত মাদক কারবারী মোহাম্মদ আলম ওরফে শফিয়া’র বাড়িতে নিমন্ত্রনে ডেকে নিয়ে আটকে রাখে। ওইদিন রাতে ইউনুসের স্ত্রী স্বামীকে উদ্ধারের জন্য কয়েকজন লোক নিয়ে আলমের বাড়িতে যায়। এসময় আলমের কাছে স্ত্রী মুঠোফোনে এঁটো আকুতি মিনতি করেও কিন্তু স্বামীকে জীবিত উদ্ধারে ব্যর্ত হয়। স্বামীকে সকালে বাড়িতে নিয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করে ফিরে দেন আলম। পরেরদিন বুধবার ভোরে হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী প্রধান সড়কের পাশের আনোয়ার প্রজেক্ট সংলগ্ন ব্রীজের নিচে খাল থেকে তার স্বামী লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর থেকেই মোহাম্মদ আলম ওরফে শফিয়াসহ তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন।
